দূর্নীতির দ্বায়ে অভিযুক্ত জয় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, স্বৈরাচারের তকমা নিয়ে ভারতে পলাতক শেখ হাসিনার পুত্র এবং সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন।

গত শনিবার, ১০ মে ২০২৫, তিনি ওয়াশিংটন ডিসির ইউএস সিটিজেনশিপ সেন্টারে নাগরিকত্বের শপথ গ্রহণ করেন এবং নাগরিকত্ব সনদ গ্রহণ করেন। সনদ পাওয়ার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন।

শপথ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের মোট ২২ জন ব্যক্তি অংশ নেন, যাদের মধ্যে তিনজন ছিলেন বাংলাদেশি। সজীব ওয়াজেদ জয় ছিলেন দ্বিতীয় বাংলাদেশি, যিনি শপথ গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে তিনি একজন আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখযোগ্য যে ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল, সজীব ওয়াজেদ জয় তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দাবি করেছিলেন যে, তার কোনো বিদেশি পাসপোর্ট নেই এবং তিনি গর্বের সাথে সবুজ বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে যাতায়াত করেন। তিনি আরও উল্লেখ করেছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে তার স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি (গ্রিন কার্ড) রয়েছে।

এই নাগরিকত্ব গ্রহণের ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার সূত্রপাত করেছে, বিশেষ করে এই সময়ে যখন সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার মা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চলছে।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এর তদন্তে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ৮টি বিলাসবহুল গাড়ি এবং ৫টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। এফবিআইয়ের অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে ৩০ কোটি ডলার (প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা) পাচার করেছেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর তদন্ত শুরু করে। 

সজীব ওয়াজেদ জয় এই অভিযোগগুলোকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করেছেন। তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে একটি পোস্টে বলেন, এফবিআইয়ের রিপোর্টটি ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে ভরা। তিনি আরও দাবি করেন, রিপোর্টে যে এফবিআই এজেন্টের কথা বলা হয়েছে, তিনি বহু বছর আগেই সংস্থা থেকে অবসর নিয়েছেন, এবং যে বিচার বিভাগের আইনজীবীর কথা বলা হয়েছে, তিনি ২০১৩ সালে মারা গেছেন। 

এই পরিস্থিতিতে, সজীব ওয়াজেদ জয়ের যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই ঘটনা ভবিষ্যতে কী প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।